নিজস্ব সংবাদদাতা ( মহম্মদবাজার ) : প্রহর গুনছে গোটা গ্ৰাম । বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার সারা দিন পেরিয়ে গেলেও এলো না লাদাখ সীমান্তে শহীদ রাজেশ ওরাং এর দেহ । গতকাল থেকে দফায় দফায় গ্ৰামে এসেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা । আজকেও প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে । কিন্তু আজ ও এলো না শহীদের দেহ গ্ৰামের মাটিতে । নিঃস্তব্ধ বীরভূমের মহম্মদবাজারের বেলঘড়িয়া গ্ৰাম ! এই গ্ৰামের মাটিতেই বেড়ে ওঠা রাজেশের । পরিবার , বন্ধু বান্ধব ছেড়ে পাঁচ বছর আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলো সে । কথা ছিলো বোনের বিয়ে দেওয়ার , কথা ছিলো বাবা মাকে নিয়ে গ্ৰাম থেকে শহরে থাকার । সে সব কথা স্মৃতি হয়েই রয়ে গেল । পাড়ার গ্ৰামের বন্ধুরা সকলে হাতড়ে হাতড়ে খুঁজছে পুরানো স্মৃতি । মোবাইল বন্দী কোথাও একটুকরো ছবি দেখলেই চোখের কোনে চিকচিক করছে জল । ঝাপসা হয়ে আসছে আবেগে । দলা পাকাচ্ছে গলার কাছে চাপা কান্না বলছেন গ্ৰামের বাসিন্দারাই । রাজেশের জন্য গর্বিত গোটা গ্ৰাম । তাই শেষ দেখা দেখার জন্য রাত জাগছে মহম্মদবাজার । প্রস্তুতি সব শেষ । ইতিমধ্যেই যেখানে রাজেশের দেহ সমাধিস্থ করা হবে তার কাজ ও শেষ হয়ে গেছে । স্মৃতি স্তম্ভ হিসাবে উজ্জ্বল থাকবে রাজেশ গ্ৰামের বুকে । সকাল থেকে প্রচুর মানুষ , রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনা । আসছেন পুলিশ আধিকারিকরা । গ্ৰামের মাটিতে কি রকম যেন একটা আবহাওয়া । এত মানুষ কারো মুখে কথা নেই । বন্ধুরা মুখ নামিয়ে মোবাইলে হাতড়াচ্ছে রাজেশ কে নিয়ে দেখানো বিভিন্ন খবর । চোখ মুছে নিচ্ছে কেউ কেউ অজান্তে । কাল আসবে বীর শহীদ রাজেশের কফিনবন্দী দেহ এমনটাই জানা যাচ্ছে প্রশাসন সুত্রে । তাতে কি যায় আসে ? অপেক্ষা করতে রাজি গোটা গ্ৰাম । সকলেই চান ছুটে আসুক রাজেশ আবার । গলা তুলে বলুক " কি ভাই কেমন আছিস ? " চাইছে বন্ধুরা । কিন্তু বাস্তব অন্য । রাজেশ আসবে । উৎকন্ঠা বাড়ছে সময়ের সাথে । চড়ছে কান্নার পারদ । বীরভূমের মাটি আরো একবার ভারাক্রান্ত বীর যোদ্ধার স্মরণে ।